প্রকাশিত: Wed, Apr 5, 2023 5:15 PM
আপডেট: Wed, Jun 25, 2025 5:29 AM

সিএসআর তহবিল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে

আতিউর রহমান : বঙ্গবাজারে আগুনে পুড়ে গেছে হাজার হাজার ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন। তাদের দোকানে যেসব গরিব কর্মচারিদের কী দুরবস্থা, তা ভাবতেও গা শিওরে উঠে। ক্ষতিগ্রস্ত এই ব্যবসায়ীদের চরম বিপদে আমি দারুণ ব্যথিত। সামনে ঈদ। খুশির ঈদকে সামনে রেখে নিশ্চয় তারা তাদের নিজেদের এবং ধার করে অর্থ যোগাড় করে তাদের দোকান সাজিয়েছিলো। আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেলো তাদের সব স্বপ্ন। এই অগ্নিকাণ্ড আবার প্রমাণ করলো আমরা আগুনের ঝুঁকি মোকাবেলায় ব্যক্তিগত, সাংগঠনিক এবং প্রতিষ্ঠানিকভাবে কতোই না দুর্বল। বারবার আগুন লাগছে ব্যবসা কেন্দ্রে। কিন্তু কিছুতেই ঠেকাতে পারছি না। এ যেন নিয়তি। সমাজকে এবং সংশ্লিষ্ট অন্য সকল অংশিজনকে তাই আরও সচেতন ও পেশাদারি হতে হবে। তা না হলে এই বিপদ থেকে আমাদের রক্ষা পাওয়া বেশ মুশকিল হবে। 

আমাদের কি করা উচিত? সরকার নিশ্চয় তার সাধ্যমতো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে। কিন্তু তাদের দরকার পুঁজি। আমাদের ব্যাংক ও অন্যান্য কর্পোরেটের এই মুহূর্তে সামাজিক দায়বদ্ধতার সর্বোচ্চ অঙ্গিকার দেখাতে হবে। তাদের সিএসআর তহবিল থেকে এদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। এফবিসিসিআই, এমসিসিসিআই, ডিসিসিআই সহ সকল বাণিজ্য সংগঠনগুলোর কাছে বিনীত আহবান জানাই তারা যেন উদার হস্তে এই অসাহায় উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়াবার জন্য তাদের সকল সদস্যদের প্রতি উদাত্ত আবেদন জানান। 

ঢাকার দুই মেয়র এই দুর্যোগের সময় মানবিক অনেক কিছুই করার আছে। আমাদের বড় এনজিওদেরও এই দুঃসময়ে অসহায় ব্যবসায়ীদের জন্য কিছু একটা করার আহ্বান জানাই। তাদের পুনর্বাসনে সমাজের সকল অংশকেই এগিয়ে আসতে হবে। দল-মত নির্বিশেষে সবার প্রতিই এই আবেদন। আগুনে ভস্মিভূত হওয়া দোকানের বিপর্যস্ত মালিক ও কর্মীদের জন্য জানাই আমার অন্তরের গভীরতম সমবেদনা। অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের জানাই সশ্রদ্ধ সালাম। তাদের প্রাণান্ত চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত এই আগুন নেভানো সম্ভব হয়েছে। আমরা রানা প্লাজা বিপর্যয়ের পর সামাজিক পুঁজির এক বিস্ফোরণ দেখেছিলো। ব্যাংকগুলোর সিএসআর তহবিলের অর্থ দিয়ে আমরা আহত নিহত কর্মীদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে বড় উদ্যোগ নিতে পেরেছিলাম। বাংলাদেশ ব্যাংক নিশ্চয়ই মানবিক সেই উদ্যোগের পুনরাবৃত্তি করতে সক্ষম। লেখক: সাবেক গভর্নর, বাংলাদেশ